, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ , ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


হাত খরচের টাকা না দেওয়ায় হত্যার পর মায়ের মরদেহ ডিপ ফ্রিজে রাখেন ছেলে

  • আপলোড সময় : ১২-১১-২০২৪ ০৫:৪৪:৩৯ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১২-১১-২০২৪ ০৫:৪৪:৩৯ অপরাহ্ন
হাত খরচের টাকা না দেওয়ায় হত্যার পর মায়ের মরদেহ ডিপ ফ্রিজে রাখেন ছেলে
এবার প্রেম ও হাত খরচের টাকা না দেয়া নিয়ে ক্ষোভে মাকে হত্যার পরে ডিপ ফ্রিজে রাখেন ছেলে। প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন প্রমাণের ভিত্তিতে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাবকে এ তথ্য জানান সাদ বিন আজিজুর রহমান (১৯)। আজ মঙ্গলবার সকালে র‍্যাব-১২ বগুড়ার কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. এহতেশামুল হক খান  নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

এদিকে সাদ বিন আজিজুর রহমান দুপচাঁচিয়ার দারুসসুন্নাহ কামিল মাদ্রাসা ও উপজেলা মসজিদের খতিব আজিজুর রহমানের ছোট ছেলে। সোমবার (১১ নভেম্বর) দিবাগত রাত ১২টার দিকে অভিযুক্তের দাদার বাড়ি পার্শ্ববর্তী কাহালু উপজেলার পাঁচ পীর আড়োবাড়ী এলাকা থেকে সাদ বিন আজিজুর রহমানকে আটক করা হয়। পরে হত্যার ঘটনায় তাকে গ্রেফতার দেখায় র‍্যাব।

এর আগে গত রোববার (১০ নভেম্বর) দুপুরে সাদ বিন আজিজুর রহমানের মা উম্মে সালমা খাতুনের (৫০) মরদেহ বাড়ির ডিপ ফ্রিজের ভিতরে পাওয়া যায়। সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-১২ বগুড়ার কোম্পানি কমান্ডার জানান, হত্যার বিষয়ে অনুসন্ধান চালানো হয়। মোবাইল ট্র্যাকিংয়ে হত্যাকাণ্ডের আনুমানিক সময় মা ও ছেলের অবস্থান একই জায়গায় ছিল। আবার সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ওই দিন নিহতের ছেলে ছাড়া সন্দেহভাজন কাউকে দেখা যায়নি।

এ ঘটনায় আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে সাদ বিন হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে বলে জানান র‍্যাব কমান্ডার। তিনি বলেন, সাদ বিন আজিজুর রহমানের প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে মায়ের সঙ্গে মনোমালিন্য ছিল। আর সম্ভবত জুয়া খেলায় তিনি জড়িয়ে পড়ে। এ জন্য সে টাকা নিয়ে প্রতিদিন বাড়িতে ঝগড়া করত মায়ের সঙ্গে।

হত্যার পর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে র‍্যাব জানতে পারে, উম্মে সালমা খাতুনের সঙ্গে তার ছেলে মো. সাদ বিন আজিজুর রহমানের হাত খরচের টাকা দেয়াকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে ঝগড়া বিবাদ চলে আসছিলো এবং বাসা থেকে প্রায় প্রতিদিনই ৫০০-১০০০ টাকা হারিয়ে যেত। ঘটনার দিন সকালে মায়ের সঙ্গে হাত খরচের টাকা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয় সাদের। পরে তিনি রাগ করে সকালের নাস্তা না খেয়ে মাদ্রাসায় চলে যান।

হত্যার দিনের ঘটনার বর্ণনায় র‍্যাব কর্মকর্তা জানান, মাদ্রাসায় সকাল সাড়ে ১২টার দিকে ক্লাসের বিরতির সময় বাসার প্রবেশ করে সাদ তার মাকে তরকারি কাটতে দেখেন। এ সময় পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তার মায়ের পিছন দিক থেকে নাক-মুখ চেপে ধরে ধস্তাধস্তি শুরু করেন। এর এক পর্যায়ে তার মা বাঁচার জন্য চেষ্টা করতে থাকলে ভিকটিমের হাতের তর্জনী আঙ্গুলের নীচে তরকারি কাটার বটি লেগে হালকা কেটে যায়। পরে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে মারা যান সালমা।

এরপর দুই হাত ওড়না দিয়ে বেঁধে বাসায় থাকা ডিপ ফ্রিজের ভিতর রেখে দেয়া হয় মাকে। ঘটনাটি ডাকাতি হিসেবে সাজানোর জন্য সাদ বাসায় থাকা কুড়াল দিয়ে তার বাবা এবং মায়ের বেডরুমে থাকা আলমারিতে কয়েকটি কোপ মেরে কুড়াল সেখানে রেখে বাসার মেইন গেইটে তালা দিয়ে বের হয়ে যায়।

রোববার দুপুরের উপজেলা সদরের জয়পুরপাড়া এলাকায় ‘আজিজিয়া মঞ্জিল নামে নিজ বাসায় উম্মে সালমা খাতুনের (৫০) মরদেহ ডিপ ফ্রিজের ভিতর থেকে উদ্ধার করা হয়। বাড়িতে আলমারি ভাঙা ও জিনিসপত্র এলোমেলো রাখা ছিল। উম্মে সালমার স্বামী খতিব আজিজুর রহমান স্থানীয়ভাবে সম্মানিত ও প্রভাবশালী ব্যক্তি। প্রকাশ্যে দিনের বেলায় জনবহুল এলাকায় এমন ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। স্থানীয়দের মধ্যে ডাকাতির আতঙ্ক চলে আসে।
সেনাকুঞ্জে কুশল বিনিময় করলেন ‍ড. মুহাম্মদ ইউনূস-খালেদা জিয়া

সেনাকুঞ্জে কুশল বিনিময় করলেন ‍ড. মুহাম্মদ ইউনূস-খালেদা জিয়া